North Bengal : সোমেই উত্তরে যাচ্ছেন মমতা ! মৃত্যু ছাড়াল ২০ ,উত্তরে কার্যত বন্যা পরিস্থিতি, বাতিল একাধিক ট্রেন,লোকালয়ে ঢুকছে বণ্য প্রাণীরা
North Bengal
লক্ষী শর্মা : টানা বৃষ্টি এবং শনিবার রাতভর প্রবল বৃষ্টিতে ধসে কার্যত বিদ্ধস্ত গোটা পাহাড়। ধসেই মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। দার্জিলিংয়ে একাধিক জায়গায় ধসের জেরে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের মতো। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

মিরিক মহকুমায় মৃতেরা হল :
মিরিক মহকুমায় মৃতেরা হল, ১) ঊষা রাই (৭২), ২) বিজেন্দ্র রাই (৭০), ৩) সাধনা তামাং (৩৫) , ৪) আহান ছেত্রী (৯), ৫) রুহি তামাং (১১), ৬) স্নেহা প্রধান ( ১৯) , ৭) অনুজ প্রধান (৪২), ৮) আরুষি ছেত্রী (১২) , ৯) অনিতা প্রধান (৪১), ১০) ফুচুং ডুকমা ( ৫০), ১১) সুমিত লেপচা (৪৬), ১২) মিনা সেওয়া (৬২), ১৩) জ্ঞানচুক তামাং (২০) ,১৪) বাবুলাল রাই (৪২), ১৫) সাধনা তামাং ( ৩৫)। এছাড়াও মানেভঞ্জন এলকায় অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো ৩টি দেহ ও সুখিয়াপোখরি ব্লকের সোম সিয়েকে আরো ২টি অজ্ঞাত পরিচয়ের দেহ উদ্ধার হয়।
সোমবারই উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় :
অতি বৃষ্টি ও ধসের কারনে পাহাড় থেকে তরাই -সব জায়গাতেই চরম দুর্ভোগের চিত্র ধরা পড়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, পরিস্থিতি নিজে খতিয়ে দেখতে সোমবারই (৬.১০.২৫) উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুর দু’টো নাগাদ তিনি কলকাতা থেকে বিমানে রওনা হবেনা এবং সরাসরি উত্তরকন্যা প্রশাসনিক ভবনের পৌঁছে জরুরি বৈঠক করবেন।
ইতিমধ্যেই ৫ জেলাশাসমকে নিয়ে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আটকে পরা পর্যটকদের জন্যও বিশেষ বার্তা দিয়েছেন।
মমতা ব্যানার্জি এক্স-এ বলেছেন, “গত রাতের কয়েক ঘন্টার মধ্যে হঠাৎ করে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে এবং বাইরে থেকে আমাদের রাজ্যে অতিরিক্ত নদীর জলের স্রোতের কারণে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হওয়ায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং উদ্বিগ্ন”।
তিনি আরও বলেন, “গতকাল রাতে উত্তরবঙ্গে ১২ ঘন্টার মধ্যে হঠাৎ ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছিল এবং একই সাথে সংকোশ নদীতে অতিরিক্ত জল প্রবাহিত হয়েছিল এবং সাধারণত ভুটান ও সিকিম থেকে নদীর জল প্রবাহিত হয়েছিল। এর ফলে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।”
দার্জিলিং জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে মিরিকে লোহার সেতু ভেঙে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। অপরদিকে কার্শিয়াংয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক রায় বলেন, মিরিকে ধস থেকে পাঁচটি দেহ উদ্ধার করা গিয়েছে। এছাড়াও সুখিয়াতে আরো ৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। বেলার দিকে বৃষ্টি কমায় জোরকদমে চলছে উদ্ধার কাজ।
জিটিএ’র চিফ এগজিকিউটিভ অনিত থাপা জানান, জিটিএ’র বিপর্যয় বিভাগ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। শিশু ও মহিলাদের নিরাপদে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিপদে পড়া মানুষদের পরিস্থিতি পঞ্চায়েত সদস্য, জিটিএ,আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের জানাতে বলেছে। পাহাড়ে ধসে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
আরো পড়ুন : Nagrakata : চিতা বাঘের পর এবার চতুর্থীর রাতে দাঁতাল হাতির হামলা, মৃত্যু এক যুবকের
পাশাপাশি স্থানীয় কালীবাড়ি এলকাতেও একটি গন্ডার লোকালয়ে চলে আসে। শুধু হাতি-গন্ডারনয়, কাশিয়ার বাড়ি লোকালয় থেকে স্থানীয়রা একটি বাইসনের শাবক উদ্ধার করে। কার্শিয়াংয়ের একটি গ্রামে ঢুকে পড়ে একাধিক হরিণ। বহু বণ্যপ্রাণি জঙ্গল থেকে নদীতে ভেসে গিয়েছে এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। পর্যবেক্ষনে রয়েছেন বনকর্মীরা।
উত্তরবঙ্গের কোথায় কত পরিমান বৃষ্টি হয়েছে :
হাওয়া অফিসের রিপোর্ট অনুযায়ী, কুর্তু (জলপাইগুড়ি) ৩৪৪ মিলি মিটার বৃষ্টি হয়েছে।
ডায়না (জলপাইগুড়ি) বৃষ্টি হয়েছে ৩১০ মিলিমিটার।
গাজলডোবা (জলপাইগুড়ি) বৃষ্টি হয়েছে ৩০২ মিলিমিটার।
মেখলিগঞ্জে (কোচবিহার) বৃষ্টি হয়েছে ২৬৪ মিলিমিটার।
দার্জিলিং জেলায় বৃষ্টি হয়েছে ২৬১ মিলিমিটার।
নেওড়ায় (জলপাইগুড়ি) বৃষ্টি হয়েছে ২৪৫ মিলিমিটার।
লাভাতে (কালিম্পং) বৃষ্টি হয়েছে ২০২ মিলি মিটার।
বিজনবাড়িতে ( দার্জিলিং) বৃষ্টি হয়েছে ১৫৪ মিলি মিটার।
অপর দিকে ধসের কারনে সিকিম রাজ্যেও আটকে বহু পর্যটক।
